ধূমপান কিভাবে ছাড়বেন? কেন ছাড়বেন?
সিগারেটে ক্ষতিকর কি আছে?
সিগারেটের ধোঁয়ায় উপস্থিত টার (আলকাতরা জাতীয়) এবং কার্বন মনোক্সাইড শরীরের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। কার্বন মনোক্সাইডকে নিরব ঘাতক বলা হয়।
ধূমপান কি ক্ষতি করছে?
ফুসফুস ক্যান্সারের প্রধান কারণ ধূমপান (৮৬%), এছাড়া ফুসফুসের অন্যান্য জটিল রোগ যেমন-COPD এর জন্যে দায়ী সিগারেটের এই কালো ধোঁয়া। ধূমপানের কারণে শরীরের রক্তনালী শক্ত হয়ে যায় যার ফলে হার্ট এটাক, স্ট্রোক এবং পায়ে রক্তসঞ্চালন সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবার ঝুঁকি বাড়ে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় ধূমপায়ী ব্যাক্তির পরিবারের শিশুরা। তাদের শরীরে এই কালো ধোঁয়া প্রবেশ করে সিগারেটের কোন ফিল্টার ছাড়া!
কিভাবে ধূমপান ছাড়বেন?
প্রতিদিন ৪ টি করে সিগারেটের সংখ্যা কমান। ২ সপ্তাহের মধ্যে সিগারেট সম্পূর্ণ পরিহারের টার্গেট রাখুন। আপনি ব্যার্থ হলে একই প্রচেষ্টা কয়েকবার করুন।
👉 টিপস:
→ধূমপান বর্জনের জন্য একটি নির্দিষ্ট দিন ঠিক করুন।
→বর্জনের পর:
১. শাকসবজি ও ফলমূল খাবার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন।
২. গাজর, শুকনো ফল ইত্যাদি নিজের কাছে
সবসময় খাবার জন্য রাখতে পারেন।
৩. ধূমপানের তীব্র ইচ্ছা হলে তার পরিবর্তে টক ফল
খান।
৪. কম মিস্টিযুক্ত চিউইংগাম ও লজেন্স খান।
৫. একই স্থানে দীর্ঘ সময় বসে না থেকে দৌড়ানো,
সাইকেল চালানো, সাঁতার প্রভৃতি পরিশ্রমের কাজে ব্যাস্ত থাকুন।
৬. সিগারেট খায়না বা বর্জন করেছে এমন সঙ্গীদের সাথে বেশি সময় কাটান।
৭. প্রতিদিন ৩ লিটার পানি পান করুন।
৮. সিগারেটে খরচের টাকা জমিয়ে আপনি নিজেকে পুরষ্কৃত করুন।
হাল ছেড়ে দিলে বিকল্প নিকোটিন (Nicotine replacement therapy) দ্বারা চিকিৎসার জন্য একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ধূমপান বর্জনে কি উপকার পাবেন?
হার্ট এটাক, ব্রেইন স্ট্রোক, ফুসফুসের ক্যান্সার, COPD প্রভৃতি রোগের ঝুঁকি নাটকীয়ভাবে কমে যাবে। স্বাদ, ঘ্রাণ, যৌনতা (Sexual pleasure) প্রভৃতি অনুভূতির ক্ষমতা বাড়বে। ফুসফুসে অক্সিজেন ধারণক্ষমতা বাড়বে। ধূমপানের পেছনে খরচের টাকা আপনার পকেটে জমবে।
ধূমপান ছেড়ে দিলে কি অসুবিধা হবে?
প্রথম কিছুদিন অস্থিরতা, তিরিক্ষি মেজাজ, দুশ্চিন্তা, শরীর ঘামানো এবং দূর্বলতা লাগতে পারে। তবে এই অনুভূতিগুলো হচ্ছে নিকোটিনের নেশা কাটিয়ে শরীরের পূর্বের অবস্থায় ফেরত যাবার লক্ষণ, সাধারণত ধূমপান ত্যাগের ১০ দিন পর এই লক্ষণগুলি আর থাকবেনা। এরপর থেকে নিজেকে অনেক বেশি প্রাণবন্ত মনে হবে 😀
ধন্যবাদ।
Written by Dr. A. N. RAKIB
Comments
Post a Comment