ডেঙ্গু জ্বরের প্রধান লক্ষণগুলো কি কি? প্রতিরোধের উপায় কি? ডেঙ্গু জ্বর হলে আপনার করণীয় কি?
ডেংগু জ্বর আমাদের দেশের জন্য একটি Public health concern. বাংলাদেশে প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত হন। ২০১৯ সালে আমাদের দেশে ১ লক্ষেরও অধিক মানুষ ডেংগুজ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
রাজধানী ঢাকা এবং এর আশেপাশের শহর অঞ্চলে মূলত এই রোগের বিস্তার। আমাদের দেশে জুন থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত, বিশেষ করে জুলাই এবং আগস্টের বর্ষাকালীন সময়ে ডেংগুজ্বরের প্রাদুর্ভাব বেশি, যদিও এই বছর মে মাস থেকেই ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর দেখা মিলছে।
আপনারা জানেন, ডেংগু একটি ভাইরাস এবং
এডিস মশার কামড়ে মানুষের শরীরে এই ভাইরাসটি ছড়ায়।
এডিস মশা কখন কামড়ায়?
ভোরবেলা এবং সন্ধ্যায় এই মশা বেশি কামড়ায়।
ডেংগুজ্বরে কি কি লক্ষণ থাকতে পারে?
→উচ্চ মাত্রার জ্বর। অনেকসময়ই তাপমাত্রা ১০৪° ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যায়।
→প্রচন্ড মাথা ব্যাথা, বিশেষ করে চোখের পেছন দিকে ব্যাথা।
→গিরায় ব্যাথা এবং মাংসপেশীতে ব্যাথা।
→অবসাদ ও ক্লান্তি।
→বমির ভাব ও বমি।
→জ্বর কমের দিকে যাওয়ার পর চামড়ায় লাল লাল র্যাশ হতে পারে।
→নাক দিয়ে অথবা দাঁতের মাড়ি দিয়ে সামান্য রক্ত যেতে পারে।
প্রতিরোধ কিভাবে করবেন?
→মশা যাতে না কামড়াতে পারে বিশেষ করে ভোরবেলা এবং সন্ধ্যায়, তার জন্য মশারি, Mosquito repellent cream, জানালায় নেট ইত্যাদি ব্যাবহার করুন।
→পানি জমে থেকে মশার বংশবৃদ্ধি ঘটতে পারে এরকম পাত্র সরিয়ে ফেলুন।
ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত হলে কি করবেন?
→পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
→প্রচুর তরল খাবার গ্রহণ করুন।
→ব্লাড প্রেসার স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যাচ্ছে কিনা খেয়াল রাখুন।
→চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া জ্বর বা ব্যাথার জন্য প্যারাসিটামল ব্যাতিত অন্য কোন ব্যাথার ঔষধ (যেমন: Aspirin, Ibuprofen, other NSAID) ভুল করেও খাবেন না।
→ডেঙ্গু জ্বরের ওয়ার্নিং সাইন সম্বন্ধে সতর্ক থাকুন।
ডেংগু জ্বরের ওয়ার্নিং সাইনগুলো কি কি?
→পেট ব্যাথা হওয়া।
→বারবার বমি হওয়া।
→রক্তক্ষরণ, যেমন: নাক বা মাড়ি দিয়ে রক্ত যাওয়া।
→রক্তচাপ কমে যাওয়া, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট হওয়া, শরীরে পানি আসা।
→হাত-পা ছেড়ে নেতিয়ে যাওয়া বা প্রচন্ড অস্থিরতা।
জটিলতার এই লক্ষণগুলি জ্বর হবার ৩য় থেকে ৭ম দিনের মধ্যে দেখা দেয় যেকারণে এই সময়টাকে ডেংগু জ্বরের Critical Phase বলা হয়।
ডেংগু জ্বরে আক্রান্ত ব্যাক্তির কি কি জটিলতা হতে পারে?
আক্রান্ত ব্যাক্তির তিন ধরনের জটিলতা হতে পারে যার পরিণতি মারাত্মক:
1. Dengue Shock syndrome
2. Dengue Hemorrhagic Fever
3. Severe organ involvement
আক্রান্ত শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী মা ও অন্যান্য রোগ (যেমন ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি)-তে আক্রান্ত ব্যাক্তি এবং
জ্বরের সাথে যাদের উল্লিখিত ওয়ার্নিং সাইনগুলো আছে তারা চিকিৎসার জন্য দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হবেন।
ধন্যবাদ।
©Dr. A. N. RAKIB
Healthy Horizons Bangladesh
Comments
Post a Comment